মো. শহিদুজ্জামান রনি: কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় গত ২০১৪-১৯ পাঁচ বছরে ২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।
এক সময়ের দুর্গম ও নদীবেষ্টিত এ জনপদের ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, গ্রামীণ অবকাঠামো ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সর্বত্র লেগেছে তার উন্নয়নের ছোঁয়া। এতেই মেঘনা অঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তনের শুরু হয়। সরেজমিনে জানা যায়, চারপাশে নদী ঘেরা এই মেঘনা উপজেলায় ২০১৪ সালের আগে বর্ষা মৌসুমে মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল ইঞ্জিনচালিত নৌকা, আর শুকনা মৌসুমে পায়ে হেঁটেই তাদের গন্তব্যে যেতে হতো। দুর্গম এলাকা হওয়ায় ছেলেমেয়েদের শিক্ষা এবং রোগীদের চিকিৎসাসহ নানা ক্ষেত্রে জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে মৎস্য ও কৃষিপণ্যের সঠিক মূল্য পেতেন না চাষিরা। অবহেলিত এলাকাবাসীর দাবির মুখে ১৯৯৭ সালে ৮টি ইউনিয়ন ও শতাধিক গ্রাম নিয়ে মেঘনা নদীর নামে এ উপজেলা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ওই এলাকায় ক্রমে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করে। তবে ২০১৪ থেকে ১৯ সাল সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম এর সময়ের মধ্যে গ্রামীণ অবকাঠামো, রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট, ব্যাংক- বীমা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় সবই গড়ে উঠে এবং এই এলাকার ঘরে ঘরে জ্বলে উঠে বিদ্যুতের আলো। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এ উপজেলা থেকে রাজধানী ঢাকা ও জেলা শহর কুমিল্লাসহ সকল স্থানে সরাসরি বাস সার্ভিস এবং পণ্য পরিবহনের গাড়ি চালু হওয়ায় যাতায়াতসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে। বিশেষ করে আব্দুস সালামের সময়ের এই পাঁচ বছরে মেঘনা উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে এলাকার মানুষ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেছে। মেঘনা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, আমার সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনার অবদান ও ততকালীন ‘স্থানীয় এমপি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়ার তত্ত্বাবধানে এবং আমার প্রচেষ্টায় ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ বছরে এ উপজেলায় ২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। ওই সময়ে শতভাগ বিদ্যুতায়ন, বিভিন্ন নদ-নদী ও নদীর শাখার উপর ৪০টি ছোট-বড় ব্রিজ নির্মাণ, ৭০ কিলোমিটার নতুন কাঁচা রাস্তা ও ৪০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, মানিকারচর বঙ্গবন্ধু কলেজসহ ২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ও একটি উচ্চ বিদ্যালয় এমপিওভুক্তকরণ, একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন, উপজেলার ৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ বিতরণ, প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিল চালুকরণ ছাড়াও উপজেলার মসজিদ-মাদরাসা-কবরস্থানের উন্নয়ন এবং সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সোলার প্যানেল স্থাপনসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি এবং এ উপজেলায় আরো প্রায় পাঁচশ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রেখেছিলাম। এতে এ অঞ্চলের জনগণের জীবনমানের বৈপ্লবিক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে এবং এক সময়ের অবহেলিত এ এলাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় এমপির উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের ফলে একটি মডেল উপজেলায় উন্নীত হচ্ছে।