সমালোচিত ওসি মাহাবুবের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) এক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সাংবাদিকের হাতে এসেছে। ইতোমধ্যে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অভিযুক্ত ওসির নাম মাহাবুব আলম। তিনি আরএমপির চন্দ্রিমা থানার বর্তমান ওসি। এর আগেও মাহাবুবের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে এক নারী পুলিশ পরিদর্শকের স্বামীকে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তারের অভিযোগ রয়েছে। ফিটিং মামলা দেওয়া, মাদক কারবারিদের সঙ্গে সখতা গড়ে মাসোহারা উত্তোলন, বহু বিবাহসহ নানা ঘটনায় বহুল সমালোচিত এ ওসি ঘুরে ফিরে আরএমপিতে কর্মরত আছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। তাঁর বাড়ি রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলায়। সাংবাদিকদের হাতে আসা ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, ওসি মাহাবুব তার দপ্তরে নিজের চেয়ারে বসে রয়েছেন। সামনে থাকা এক ব্যক্তি তার কাছে একটি খাম চান। এ সময় ওসি তার ড্রয়ার থেকে খাম বের করে দেন। পরে ওই ব্যক্তি সেই খামে টাকা ভরে খামটি এগিয়ে দিলে ওসি সেই খাম তার ড্রয়ারে পুরে নেন। ওই ব্যক্তি ওসিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাহাবুব (ওসি) ভাই আপনি আমাকে চেনেন, জানেন, বোঝেন। আমি বিপদে পড়েছি বলে আপনার কাছে এসেছি। আমি সব সময় বিপদেই পড়ি। দেন একটা খাম দেন। আমি জানি যে আমি আসলে কাজ হবেই। আর এক দিন এসে বলব ও আমাকে কী পর্যায়ে পেরেশানির মধ্যে রেখেছে। যদি অফিসিয়াল সলিউশন করতে পারতাম আমি! সে জিএম সাহেবের কাছে ৪০ জন লোক নিয়ে গেছে ‘রিমুভ ফ্রম সার্ভিস’ করার জন্য আমার বোনের। আমি আপনাকে কী বোঝাব। এ সময় ওসি মাহাবুব কথাগুলোর ফাঁকে খামটি ড্রয়েরে ঢুকিয়ে ওই ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এর আগেরটাতেও আমি আপনাকে হেল্প করেছি। এ বিষয়ে ওসি মাহাবুবের সঙ্গে কথা হলে তিনি ওই টাকা নেওয়ার ঘটনা অস্বীকার করেন। এদিকে, ২০২১ সালে ওসি মাহাবুবের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে এক নারী পুলিশ পরিদর্শকের স্বামীকে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এর প্রতিকার চেয়ে ওই বছরের ২৪ মার্চ রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা। তার সেই অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ খন্দকার গোলাম ফারুক। ওই ঘটনার সময় মাহাবুব আলম দামকুড়া থানার ওসি ছিলেন। ওই সময় তিনি বোয়ালিয়া মডেল থানায় কর্মরত ছিলেন। অভিযুক্ত ওসি মাহবুব আলম ওই নারীর সাবেক স্বামী। ২০১৩ সালে তাদের বিয়ে হয়। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরে নগরীর চন্দ্রিমা থানার ললিতাহার এলাকার আব্দুল ওদুদের ছেলে মাহবুব হুসাইনকে বিয়ে করেন ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা। দামকুড়া থানায় থাকা অবস্থায় মাদকের বিভিন্ন স্পর্ট থেকে মাসোহারা নিতেন তিনি। এরপর বিভিন্ন সংবাদে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেখান থেকে বদলি হয়ে আসেন রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে। অল্পদিন সেখানে থেকে এই প্রভাবশালী ওসি যোগদান করেন চন্দ্রিমা থানায়। এরপর চন্দ্রিমা থানায় যোগদানের পর থেকে মাদকের হাট বসে এলাকাটিতে। প্রতিটি মাদক কারবারির সঙ্গে ছিলো নিবিড় যোগাযোগ। এসব বিষয়ে কথা বলতে আরএমপি’র মিডিয়া মুখপাত্র এডিসি জামিরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিয়ে তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। একারণে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Share, Follow & Subscribe

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *