মো. শহিদুজ্জামান রনি: কুমিল্লা মেঘনায় নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ঢাবি শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মেঘনা থানায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করে বালুখেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এদিকে অবৈধ বাল উত্তলোন বন্ধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসী প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২:০০ ঘটিকায় মেঘনা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এবং মেঘনা থানার সামনে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের থেকে জানা যায়, রামপ্রসাদের চরের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাংবাদিকসহ অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করেছে তাদের ৯ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মেঘনা উপজেলা মহিলাদলের সভাপতি মাহবুবা ইসলাম মিলি, মেঘনা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আঃ মতিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলা শাখার সদস্য মতো: নাজিমুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিফাতসহ রামপ্রসাদের চর গ্রামের তরুণরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেঘনা উপজেলা শাখার সমন্বয়ক নাদিমুজ্জামান বলেন, মেঘনা উপজেলার মানচিত্র থেকে রামপ্রসাদের চর গ্রামকে মুছে দেওয়ার জন্য নলচর গ্রামের কতিপয় সন্ত্রাসী উঠেপড়ে লেগেছে। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছে। এই বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হউক এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করছি। মেঘনা উপজেলা মহিলাদলের সভাপতি মাহবুবা ইসলাম মিলি বলেন আমি নলচর গ্রামের একজন বাসিন্দা আমি দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছি যার কারণে আমার স্বামী নজরুল ইসলাম কে একটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং মেঘনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি। রামপ্রসাদের চর গ্রামের ডাঃ আঃ সালাম বলেন দীর্ঘদিন যাবত আমরা বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আন্দোলন- সংগ্রাম করে যাচ্ছি কিন্তু কোন সুফল পাচ্ছি না। বালুখেকো সিন্ডিকেট আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক বালু উত্তোলন করে আমাদের বসতভিটা এবং জমিজমা কেটে নদীগর্ভে বিলীন করে দিচ্ছে। আমরা তাদের অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছি বলে তারা মেঘনা থানায় রামপ্রসাদের চর গ্রামের ০৯ (নয়) জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন মামলা দিয়েছেন। রামপ্রসাদের চর গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন আমরা এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই এবং চিরস্থায়ীভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ চাই। এ বিষয়ে মেঘনা থানার ওসি ( তদন্ত) বলেন, বাদী থানায় এসে মামলা করেছে কিন্তু আমরা মামলা নেওয়ার পর বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি যে মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা সম্পূর্ণ নির্দোষ এবং তারা গ্রাম রক্ষার জন্য দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন করে আসছে। যার কারণে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। আমরা তদন্ত করে যদি মামলার সত্যতা না পাই তাহলে মামলা থেকে সবার নাম প্রত্যাহার করা হবে। উল্লেখ্য, বালুখেকু বাদী আমজাদ হোসেনের এজাহার মতে মামলার আসামিরা হলেন নলচর গ্রামের নজরুল ইসলাম, রামপ্রসাদের চর গ্রামের মেঘনা উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হুসাইন মোহাম্মদ মহসিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শিমুল, সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেজাউল করিম, রামপ্রসাদের চর গ্রামের সজীব, মোজাম্মেল ও তোফাজ্জ্বল।