মল্লিক জামাল স্টাফ রিপোর্টার: বরগুনায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার অভিযোগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে স্কুলের শিক্ষার্থী শিক্ষক ও এলাকাবাসী। রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টায় এ.কে আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, বরগুনা সদর উপজেলার ৮নং ইউনিয়নের এ.কে আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার ইতি(১৪) কে ৯নং এম.বালিয়াতলি ইউনিয়নের মোঃ আইয়ুব আলীর ছেলে বখাটে যুবক মইনুল হাসান টিটু (১৯)র বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ করেন এলাকাবাসী ও নিহত ইতির স্বজনরা। স্বজন সূত্রে জানা যায় সুমাইয়া আক্তার ইতির বাবা মোঃ মনির ঢাকায় একটি চায়ের দোকানের ব্যবসায়ী হওয়াও কাজের সুবাদে তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন। তবে তার আরও দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ছোট মেয়ে ইতিকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতেই থাকতেন মানসিক ভারসাম্যহীন মা মোসাঃ নাজমা বেগম। মায়ের সঙ্গে বাড়িতে থাকায় এলাকার এ,কে আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পড়ালেখা করতেন ইতি। তবে প্রায় সময়ই অভিযুক্ত মইনুল হাসান টিটু তাকে উত্ত্যক্ত করতেন। গত শনিবার দুপুরের দিকে ডিসের লাইন ঠিক করার কথা বলে টিটু ইতির বাড়িতে যান। এ সময় ঘরে কেউ না থাকায় ইতিকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে হত্য করেন। পরে ঘরের টিনের চালের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ করেন নিহত ইতির পরিবার।
স্বজনরা আরও জানান ভুক্তভোগী ইতির মা নাজমা বেগম ঘরে এসে মেয়েকে দুপুরে ভাত খেতে ডাকলে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দোতালায় খুঁজতে ওঠেন। এ সময় টিনের চালের আড়ার সঙ্গে ঝুলান্ত অবস্থায় মেয়ের মরদেহ দেখতে পেয়ে আশেপাশের মানুষকে জানান তিনি। পরে স্থানীয়রা বরগুনা থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লাশের পা ঘরের পাটাতনের উপর পড়েছিলো। এতেই বোঝা যায়, ওকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রমাণ করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে। নিহত ইতির মেজো বোন ফারজানা জানান, দীর্ঘদি যাবৎ টিটু তার ছোটবোন ইতিকে উত্ত্যক্ত করতো। এক পর্যায়ে তার কাছে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলো টিটু। নিহত ইতির বাবা মো: মনির ঢাকায় থাকেন। মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বাড়িতে আসেন। পরিবারের লোকজন বলেন, টিটুর প্রস্তাবে কেউ রাজি না হওয়ায় এ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী শিক্ষক ও এলাকাবাসী বলেন, ইতি খুবই শান্ত স্বভাবের মেধাবী ছাত্রী ছিলো। ওর হত্যাকারীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বরগুনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ: হালিম বলেন, নিহত ইতির ঝুলন্ত লাশ আমরা উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। নিহতের অভিভাবকরা এসেছেন থানায় লিখিত অভিযোগ করতে। অভিযোগ করলে আমরা ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।