ফরিদপুর মেডিকেলে ফটো সাংবাদিক শেখ নয়নকে আটকে রেখে নাজেহাল

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা এক রোগীর বক্তব্য ভিডিও করতে গেলে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেখ নয়ন (৩১) নামে একজন ফটো সাংবাদিককে আটকে রেখে নাজেহাল করা হয়েছে। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দোতলায় অবিস্থত পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে। বিকেলে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ওই ফটো সাংবাদিককে আটকে রাখা হয়। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই হাসপাতালের পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ফরিদপুর প্রেসক্লাব। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন শেখ নয়ন শনিবার দুপুর দুইটার দিকে হাসপাতালটির পুরনো ভবনের দোতলায় রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা রোগীর ভিডিও করতে যান। এ সময় তাকে ছবি তুলতে বাধা এবং তার ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন কর্মরত আনসার সদস্য সুব্রত দাস। একপর্যায়ে শেখ নয়নকে ওই ভবনের নিচ তলায় আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আসাদুল্লাহ সুমনের কক্ষে নিয়ে আটকে রাখা হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে এই প্রতিবেদক ওই হাসপাতালের পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে ফোন দিয়ে কেন নয়নকে আটকে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে পরিচালক জানান, হাসপাতালের ভেতরে যেকোনো ছবি নিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি প্রয়োজন হয়, তিনি সেই অনুমতি নেননি। সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া ছবি নিতে অনুমতি প্রয়োজন হয় কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের নিষেধ আছে। পরিচালক তখন এই প্রতিবেদকের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ থাকার পর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার হাসপাতালে গিয়ে শেখ নয়নকে উদ্ধার করেন। শেখ নয়ন জানান, চরভদ্রাসন উপজেলায় রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা একজন রোগীর ছবি ও তথ্য সংগ্রহের জন্য হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দোতলায় সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহের সময় তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন আনসার সদস্যরা। পরে তাকে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তার কক্ষে নিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহাসান তালুকদারকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এ নিয়ে ফরিদপুরের কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম পিকুল জানান, শনিবার সন্ধায় প্রেসক্লাবে বিষয়টি নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। হাসপাতালে সংঘটিত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ বিচার এবং হাসপাতালের পরিচালক হুমায়ুন কবিরকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।

Share, Follow & Subscribe

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *