তীব্র তাপদাহে পুড়ছে যশোর, জনশুন্য রাস্তাঘাট, তাপমাত্রা পৌঁছালো ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রিতে
স্টাফ রিপোর্টার,যশোর থেকে : যশোরে তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্র্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে। প্রচণ্ড তাপদাহে জনশূন্য হয়ে পড়েছে শহরের রাস্তাঘাট। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউই। যাত্রীর অপোয় অলস সময় পার করছেন হাতেগোনা যানবাহনের চালকেরা। আজ শনিবার বিকাল পৌনে তিনটার দিকে যশোর বিমানবন্দর মতিউর রহমান ঘাঁটিস্থ আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৫ শতাংশ। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে। শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানা মোড় থেকে থেকে শুরু করে সিভিল কোর্টের মোড় হয়ে চাঁচড়া চেকপোস্ট হাইওয়ে পর্যন্ত পুরো আড়াই কিলোমিটার এবং যশোরের মণিহার মোড় থেকে পালবাড়ি মোড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কে শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিনই তীব্র যানজট লেগে থাকে। শহরের এই দুটি প্রবেশপথ দিয়ে মানুষজন বিভিন্ন অফিস-আদালত, হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। ফলে মানুষের উপস্থিতি এবং যানবাহনের চলাচল সব থেকে বেশি থাকে এই সড়ক দুটিতে। তবে শনিবার সড়ক দুটির চিত্র ছিল পুরোটাই ভিন্ন। তীব্র তাপদাহে জনশূন্য হয়ে পড়েছে পুরো সড়ক দুটি। মানুষের উপস্থিতি যেমন কম, তেমনি যানবাহনের উপস্থিতিও ছিল নগণ্য। শুধু মুজিব সড়কই নয়, শহরের বড়বাজারসংলগ্ন দড়াটানা মোড়, বকুলতলা, গরিব শাহ সড়ক, জেল রোড, আরএনরোড, রেল রোডসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছে। এ সকল সড়কেও নেই যানবাহনের উপস্থিতি। দু-একটা ইজিবাইক, রিকশা দেখা গেলেও যাত্রীর অপোয় মোড়ে মোড়ে ছায়ায় বসে থাকতে দেখা গেছে চালকদের। শহরের জিরো পয়েন্ট দড়াটানা মোড়ের রাস্তার ওপর রিকশা রেখে কালেক্টরেট প্রাচীরের গায়ে হেলান দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন রিকশাচালক আমির হোসেন। তিনি বলেন, ‘বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর পুরো ফাঁকা হয়ে গেছে। এত গরমে মানুষ বের হবে কী করে? পেটের দায়ে বের হয়ে যাত্রী পাচ্ছি না। ভাড়ার রিকশা চালাই, মহাজনকে দেওয়ার মতো টাকা এখনও ওঠেনি। নিজের জন্যে তো দূরের কথা।’ গত ১৯ এপ্রিল শুক্রবার যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৭ এপ্রিল ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৬ এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলৌ গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন অতীস্ঠ হয়ে উঠেছ্ তীব্র তাপদাহের ফলে পানির স্তর নেমে গেছে স্বাভাবিকের চেযে কয়েক গুন নীচেয়। যার ফলে যশোরের অধিকাংশ এলঅকায় নলকুপে পানি উঠছে না। লেয়ার ফেল মারায় বহু স্যালো ইঞ্জিন ও ডিপ টউিব ওয়েলেও পানি ওঠার পরিমান মারাত্নক ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে তীব্র হচ্ছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। যশোর পৌর সভার অধিকাংশ এলঅকার পানি সরবরাহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া রোগ ব্যাধির প্রার্দুভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে কয়েকগুনে। এর ফলে যশোর জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা সদরের হাসপাতাল গুলোতে গরমের কারনে রোগাগ্রস্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জানতে চাইলে যশোর মেডিক্যাল কলেজের শিক ডা. আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, ‘এই সময়ে ডায়রিয়া, ইনফুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, পক্স, হিটস্ট্রোক, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ইত্যাদি হতে পারে। প্রচণ্ড গরম থেকে মুক্তি পেতে কেউ যেন ডিপ ফ্রিজের পানি পান না করেন। এ সময় প্রচুর পানি, ডাবের পানি, দেশি ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন।’ দিনমজুর বিশেষ করে কৃষকরা যেন বেলা ১১টার মধ্যে এবং বিকালে তাপমাত্রা কমলে কাজ করেন সেই পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা।