রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া শিল্পকলায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক বিভাগীয় কর্মশালায় ‘উপরিভাগের আবরণ ছেটে ফেলা’ সরু মিনিকেট চাল নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়েছে। সোমবার (০৩ জুন) বেলা ১১টায় শুরু হওয়া এ কর্মশালায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপিসহ কুষ্টিয়ার চার এমপি, সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তা, বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও সকল শ্রেনি পেশার মানুষ এতে অংশ নেন। সরু চাল নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয় কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময়। উপস্থাপক নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য আবু নূর মো. শামসুজ্জামান এক অংশে বলেন, মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। মেশিনের মাধ্যমে চালের আবরণ ছেটে ফেলে সরু ও চকচকে করে মিনিকেট নামে বাজারজাত করা হচ্ছে। এতে ভিটামিন, খনিজ দ্রব্য, প্রোটিন ও শর্করা বের হয়ে যাচ্ছে পলিশের নামে। কমে যাচ্ছে পুষ্টিগুণ। এই চাল অস্বাস্থ্যকর। তিনি বলেন, এতে বছরে ১৮ লক্ষ মেট্রিক টন চাল অপচয় হচ্ছে। কর্মশালায় মুক্ত আলোচনা পর্বে মিনিকেট ধান-চাল ও পলিশ নিয়ে এসব কথার প্রতিবাদ জানান অটোমেটিক চালকল দেশ এগ্রোর মালিক আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে কৃষকরা মিনিকেট নামে যে ধান চাষ করছেন তার কি হবে? এসব ধান কি আমরা ফেলে দেবো, না বস্তার গায়ে জাতের নাম হিসেবে কি লিখবো? এসব প্রশ্ন আমরা সরকারকে করেছি, কোন উত্তর মেলেনি। খালেক দাবি করেন, চাল ছেটে সরু করা হয় না। মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা করে উপরের আবরণ পলিশ করে সিল্কি করা হয়। জবাবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষে চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, চালের উপরের আবরণ ফেলে দেয়ায় শুধু কর্বোহাইড্রেড থাকছে। অন্য জরুরি উপাদান বাদ চলে যাচ্ছে। তাই এ খাবারের খাদ্যমান নষ্ট হচ্ছে। অত:পর আলোচনায় অংশ নেন দুইজন সংসদ সদস্য। কুষ্টিয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন বলেন, মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। কিন্তু চাল আছে। মিনিকেট এখানে আবিস্কার করা হয়েছে। আব্দুর রশিদকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মিনিকেটের নামে চাল খাইয়ে তিনি মানুষের চরম ক্ষতি করেছেন। মিনিকেটের ওই জনকের অভিশাপ লেগে গেছে। কুষ্টিয়ার মানুষ সবাই জানেন তার আজ কি অবস্থা। তাই খালেক ভাইসহ চালকল মালিকদের আহ্বান জানাবো মানুষের উপকার হয় ভালো প্রজন্ম গড়ে উঠতে পারে তেমন কাজ করুন। ভালো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান মানুষকে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ (এমপি) বলেন, পলিশ করা চাল খাদ্য হিসেবে নিরাপদ হলেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।