বিপ্লব নিয়োগী তন্ময়, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: মাছরাঙা টিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর অবশেষে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সীমান্ত এলাকা মুরাদনগরে অদের খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। এ সময় অদের খালের উপর ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মিত একটি অবৈধ ব্রীজকে ভেঙে দিয়েছে মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসন। কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার জনগুরুত্বপূর্ণ নদী অদের খালে নৌ-রুট বিঘ্নিত করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মিত একটি অবৈধ ব্রীজকে অপসারণের লক্ষ্যে বুধবার বিকেলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে যায় মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসন। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি নাসরিন সুলতানা নিপা, আকুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল শিমুলসহ বাংগরাবাজার থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অবৈধ ব্রীজটি উচ্ছেদ করতে গেলে ব্রিজটির নির্মাণকারীরা মারমুখী হয়ে উঠে। স্থানীয়রা জানায়, সুমন বাবু, জয়নাল, বাছির, জাহাঙ্গীরসহ বেশকিছু লোক দলবলে এসে হামলা চালায় এবং মরিচেরগুড়া মিশ্রিত পানি ও ইটপাটকেল কাঁচের বোতল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় পুলিশের সাথে কয়েক দফায় ধাওয়া পল্টা ধাওয়া চালে। তাদের ছোঁড়া মরিচের গুড়া মিশ্রিত পানি ও ইটপাটকেল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল শিমুল সহ কয়েকজনের গায়ে আঘাত লাগে। এসময় মাছরাঙা টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম ইমরুলসহ কয়েকজনকে বেশ কিছুক্ষন অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। পরে ইন্সপেক্ট অমর চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে বাংগরা বাজার থানা পুলিশের আরেকটি টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অবশেষে অনেক নাটকীয়তা শেষে অতিরিক্ত পুলিশ এনে বুধবার রাতে ব্রিজটিকে অপসারণ করা হয়। রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, অবৈধ ব্রিজটি অপসারণই ছিলো আমাদের মূল টার্গেট। তাই, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও ধৈর্যের সাথে মোকাবিলা করে কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। এরপরও বারবার আইন অমান্য করতে থাকলে প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। উল্লেখ্য যে, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার জনগুরুত্বপূর্ণ নদী অদের খালে পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের আশ্রাফপুর গ্রামের সুমন বাবু, এরশাদ, আজাদ, রফিক, আতাউর সহ কয়েকজন মিলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নদীর রাজাবাড়ী অংশে একটি ব্রিজ নির্মাণ করে। এতে নদীতে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্রিজটি অপসারন সহ নদীটির নাব্যতা পূনরুদ্ধারে দাবী জানায় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ঐতিহ্য কুমিল্লা। এদিকে নদী ও প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন তরী বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অদের খালের রাজাবাড়ী অংশে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। এনিয়ে গত ২৮ এপ্রিল মাছরাঙা টেলিভিশনসহ বেশকিছু গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রচার হলে বিষয়টি নজরে আসে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের। জেলা প্রশাসক খন্দকার মুহম্মদ মুশফিকুর রহমান এবং জেলা প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কাবিরুল ইসলাম খান দীর্ঘ তদন্ত শেষে ব্রিজটি অপসারণের নির্দেশ দেন। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে নবীনগরের আশ্রাফপুরের সুমন বাবু, বাছির, জয়নাল ও রাজাবাড়ীর কাইয়ুমসহ একদল সন্ত্রাসী নদী পাড় হয়ে এসে মুরাদনগরের রাজাবাড়ীতে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুলের বাড়ীতে এবং সাংবাদিক রাশেদ, জাকির, জাবেদ ও জিহাদের উপর কয়েক দফায় হামলা চালিয়ে আহত করে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিলো।