রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে ইউনুস আলী (৬০) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে । এই ঘটনায় পুলিশ বাদশাহ ও আলম নামের দুই জনকে আটক করেছে। শনিবার (১৮ মে) সকালের দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মাজগ্রামের খালের পাড় মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ইউনুস আলী কুমারখালীর শিলাইদহ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আড়পাড়া গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে ও পেশায় কৃষক ছিলেন। জানা গেছে, ইউনুস আলীর ছেলের সঙ্গে মুক্তার শেখের মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। মুক্তার ইউনুসের ভগ্নিপতি। তারা একই গ্রামের বাসিন্দা। বিয়ের কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর জেরে মুক্তার তার মেয়েকে স্বামীর বাড়ি থেকে নিজবাড়িতে নিয়ে যায়। এইসব ঘটনার জেরে মুক্তার ও তার লোকজন ইউনুসের জমির ধান কাটতে বাধা দেয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় কয়েকদিন আগে কুমারখালী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ইউনুস। শনিবার সকালে ইউনুস আলী বেশ কয়েকজন শ্রমিককে নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে ধান কাটতে যায়। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মুক্তার ও মুক্তারের দুই ছেলে, উজির, বাদশা, রহন, এহের, জহুরুল ও ফরিদসহ প্রায় ৩০ জন ইউনুসকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইউনুস আলীকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। নিহতের স্বজনরা জানান, মুক্তারের মেয়ের সঙ্গে ইউনুসের ছেলের বিয়ে হয়েছিল। কয়েকদিন আগে কুমারখালী থানায় ইউনুস একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরে আজ সকালে ১৫-২০ জন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটতে যায় ইউনুস। এসময় মুক্তার ও তার লোকজন ইউনুসকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ বিষয়ে শিলাইদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী হাসান তারেক বিপ্লব জানান, ধান কাটাকে কেন্দ্র করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ বিষয়ে কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, প্রতিপক্ষের হামলায় ইউনুস আলী নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এজাহার নামীয় ১৫ জন ও অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচ জনের নামে মামলা এন্ট্রি হয়েছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাদশা ও আলম নামের দু'জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিল নিহতের পরিবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জানান, এর আগে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি।